INFO Breaking
Live
wb_sunny

Breaking News

সখীপুরে শিক্ষককে কারাদন্ডের ঘটনায় জনমনে নানা প্রশ্ন! সুষ্ঠু তদন্তের দাবি

সখীপুরে শিক্ষককে কারাদন্ডের ঘটনায় জনমনে নানা প্রশ্ন! সুষ্ঠু তদন্তের দাবি

টাঙ্গাইলের সখীপুরে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

কিন্তু এই রায় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকের দাবি ঐ শিক্ষক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে দেখা দিয়েছে মানুষের মধ্যে মিশ্র পতিক্রিয়া। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। যারা ঐ প্রধান শিক্ষককে চেনেন, তারা বেশীর ভাগই এ রায় মেনে নিতে পারছেন না।

এ বিষয়ে শরীফুল ইসলাম(৩০) নামের এক ব্যক্তি বলেন, "নিঃসন্দেহে স্যার একজন ভালো মানুষ। আমার মনে হচ্ছে ওনি ষড়যন্ত্রের শিকার"।

মাসুদ আল মামুন (২৬) বলেন, "জন্মের পরে থেকেই ওনাকে চিনি। ওনাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। এটা সুকৌশলে পাতানো ঘটনা। ঘটনাটি সম্পূর্ণ সাজানো, মিথ্যা বানোয়াট। ষড়যন্ত্র কারীর বিচার চাই। সর্বোপরি ওনি নিঃসন্দেহে একজন ভালো মানুষ"।

মেহেদী হাসান (২৩) সাবেক ছাত্র বলেন,"আমার প্রিয় স্যার উনি। একজন ভালো মানুষ। আমার বিশ্বাস এটা একটা ষড়যন্ত্র। হয়তোবা কেউ কোনো সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে ওনাকে ফাঁসানো হয়েছে। এটার সঠিক তদন্তের দাবী জানাচ্ছি"।

শরীফ খন্দকার (২০) আরেক সাবেক ছাত্র বলেন," ওনি ২০-২৫ ধরে শিক্ষকতা করছেন। ওনি খুবই ভালো মানুষ। ওনি ষড়যন্ত্রের শিকার। দীর্ঘদিন ধরে স্কুলের কমিটি ও ১ জন সহকারী শিক্ষিকার সাথে ঝামেলা চলছিলো। ওনাকে কমিটি থেকে ট্রান্সফার ও নিতে বলছিল। এতেই বুঝা যায় ওনি ষড়যন্ত্রের স্বীকার"।

এলাকাবাসীর দাবি জয়নাল আবেদীন একজন মানবিক শিক্ষক। ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন তিনি। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। এমন ঘটনা তিনি ঘটাতে পারেন না। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছেন এলাকাবাসী এবং জয়নাল আবেদীন এর সাবেক ছাত্র ছাত্রীরা।

উল্লেখ্য, উপজেলার ৫ম শ্রেণির ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার দায়ে গত ২ দিন আগে উপজেলার জামালহাটকুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদীনকে এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। জয়নাল আবেদীন সাড়াশিয়া গ্রামের মর্তুজ আলীর ছেলে।

এদিকে বাবাকে নিয়ে ছেলে সাইমন জাহিদের ফেসবুকে দেওয়া ভাইরাল স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো: 
""সৎ ব্যক্তি যুগে যুগে আসে। আবার চলেও যায়। আমরা তাড়িয়ে দেই। পুরস্কৃত করি। গলায় অপমানের মালা পরাই। তবুও সৎ ব্যক্তি আবার জন্মায়। একজন সৎ, আদর্শিক ও  চরিত্রবান শিক্ষককে যখন মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন অভিযোগ নিয়ে কারাবরণ করতে হয় তখন সন্তান হিসেবে শুধু চেয়ে দেখতে হয়!  শোকের মাসে
অজস্র নিউজে একটাই কমেন্ট। স্যারের নিঃশর্ত মুক্তি চাই। গভীর ও পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চাই। 
অনেক কিছুই লিখতে পারতাম। হয়তো আইনি কারণে লিখতে পারলাম নাহ। আপনারা আমার বাবাকে পুরস্কৃত করেছেন। ধন্যবাদ জানবেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতায় অনার্স মাস্টার্স করে শুধু বাবার চাওয়াতেই শিক্ষকতা পেশায় এসেছিলাম। এখন ভয় হয় শিক্ষকতা করতে পারবো তো!

সায়মন জাহিদ
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।""

সোমবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফারজানা আলম এ দণ্ডাদেশ দেন।

জানা যায়, জামাল হাটকুড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদীনের বিরুদ্ধে তারই প্রতিষ্ঠানের ৫ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে নানা সময় উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ ওঠে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করলে সোমবার ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তিনি ওই শিক্ষককে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

এসময় ইউএনও ফারজানা আলম বলেন, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওযায় এ সাজা  দেওয়া হয়েছে।

সখীপুর থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়া ওই প্রধান শিক্ষককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।