রবিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২২

টাঙ্গাইলে সেতু নির্মাণে অবহেলা! তিন প্রকৌশলী বরখাস্ত

সাইদুর রহমান সমীর, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলে সেতু নির্মাণে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে টাঙ্গাইল পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলীসহ তিন প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অনিয়ম হচ্ছে জেনেও আইনগত পদক্ষেপ না নেওয়ায় সদর পৌরসভার মেয়রকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে

রোববার (২০ নভেম্বর) স্থানীয় সরকার বিভাগ পৌর-১ শাখার উপ-সচিব মো. আব্দুর রহমান সাক্ষরিত এই চিঠি গুলোতে এ তথ্য পাওয়া যায়। চিঠিগুলো স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে দেয়া হয়েছে।

এছাড়া ওই চিঠিতে সেতু নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ব্রিকস্ অ্যান্ড বিল্ডিং লিমিটেড এবং দ্যা নির্মিতিকে (জেভি) প্রতিষ্ঠান দুটিকে কালো তালিকাভুক্ত করাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠান দুটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সেতু নির্মাণে ডিজাইন ও প্রাক্কলন যথাযথ অনুসরণ করেনি।


সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী, সহকারী প্রকৌশলী রাজীব গুহ ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী জিন্নাতুল হক। এদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করে দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও অসদাচরনের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ নামা প্রাপ্তির ১০ কার্য দিবসের মধ্যে তাদের লিখিত ভাবে স্থানীয় সরকার বিভাগে জানানোর জন্য বলা হয়েছে।

জানা যায়, গত ১৬ জুন রাতে বেড়াডোমা এলাকায় লৌহজং নদীর উপর সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন সেতু দেবে যায়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীন টাঙ্গাইল পৌরসভা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছিল। আট মিটার প্রস্ত ও ৪০ মিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল তিন কোটি ৬০ লাখ টাকা।


সাময়িক বরখাস্তের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নির্মাণাধীন সেতুটির ঢালাই কাজের পূর্বে সেন্টারিং ও সাটারিং’এর সময় ঠিকাদার ড্রয়িং ও ডিজাইন অনুসরণ করেননি। সেখানে বল্লি ও বাঁশের খুঁটি ব্যবহার করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ব্যক্তিরা শুধু চিঠির মাধ্যমে তাদের নিষেধ করেন। তারা ঢালাইয়ের কাজ বন্ধ করার কোন ব্যবস্থা নেননি। বরং ঢালাইয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন। এটিকে দায়িত্বে চরম অবহেলা প্রদর্শন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বরখাস্তের প্রজ্ঞাপনে।

এদিকে পৌরসভার প্রকৌশলীদের সঙ্গে ঠিকাদার পক্ষের স্থানীয় প্রভাবশালী লোকজনের অসৌজন্যমূলক আচরণ এবং সেতু নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে জেনেও কোন পদক্ষেপ না নেয়া, কাজের অগ্রগতির তুলনায় অতিরিক্ত বিল প্রদান করায় মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। আগামী ১০ কার্য দিবসের মধ্যে তাকে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।


তিন প্রকৌশলীর সাময়িক বরখাস্ত এবং কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রসঙ্গে মেয়র রোববার দুপুরে বলেন, তারা মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটের মাধ্যমে এ সংক্রান্ত চিঠি পেয়েছেন। তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই চিঠির জবাব দিবেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সেতুটি নির্মাণ কাজ পেয়েছিলেন ব্রিকস্ অ্যান্ড বিল্ডিং লিমিটেড এবং দ্যা নির্মিতি কে (জেভি) নামক দুটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু তাদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় কয়েকজন নেতা।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.