কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভার এলেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ কয়েকজন শিক্ষককে পদত্যাগে বাধ্য করতে একটি চক্র ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
জানাযায়,গত ৫ আগস্ট স্বৈরশাসক হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পরে কালিহাতী উপজেলার কয়েকটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে অপসারণের দাবীতে ছোটখাটো মিছিল ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট ৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদেরকে অপসারণের দাবীতে স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি স্বাক্ষরিত আবেদন জানানো হয়। ওই সব আবেদনের অজুহাতে এলেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহাম্ম নাজমূল করিমকে লাঞ্চিত করে তার পদত্যাগের দাবীতে সোচ্চার হয় স্থানীয় একটি রাজনৈতিক দলের স্থানীয় একাধিক নেতা।
তারা স্বৈরসরকারের পতনে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে তাদের তল্পিবাহক লোকসহ কতিপয় ছাত্র শিক্ষক ও অভিভাবকদের লেলিয়ে দেয় এলেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ নাজমূল করিমের বিরোদ্ধে ।
প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবীতে তারা একাধিকবার মিছিল নিয়ে এলেঙ্গা হাইস্কুলে প্রবেশ করে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রধান শিক্ষককে না পেয়ে ওই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক শামীম আল মামুন, সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি ) গোলাম মোস্তফা ও সহকারী গ্রন্থাগারিক মোহাম্মদ আব্দুল কাদের সিদ্দিকীর কাছ থেকে জোরজবরদস্তি করে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর নিয়ে বিদ্যালয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে। এবং ওই দৃশ্যের ভিডিও ধারন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করায় ওই বিদ্যালয়ের প্রধান মুহাম্মদ নাজমূল করিমসহ অন্যান্য শিক্ষক কর্মচারী,শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে এবং তারা নিরাপত্তা হীনতায় সময় পার করছেন বলে একাধিক সূত্র জানাগেছে ।
১৯৪১ খ্রীষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত এলেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়টিতে ২০১০ সালের ৫ আগস্ট নাজমূল করিম প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। তার যোগদানের সময় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিল ৫শতের কোঠায়। শিক্ষক কর্মচারী ছিলেন ১২জন, অবকাঠামো বলতে ছিল টিনের ঘর আর শিক্ষার গুনগতমান তেমন একটা ভাল ছিলনা। নাজমূল করিম প্রধান শিক্ষক হিসাবে ওই স্কুলে যোগদান করে ছাত্র শিক্ষক কর্মচারী, ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলোচনা করে শিক্ষার মানোন্নয়নে মনোনিবেশ করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের পড়ার টেবিলে রাখতে তার তত্বাবধানে ৯ম ১০ম শ্রেণীর জন্য আবাসিক ব্যবস্থা চালু করেন ।তিনি শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে ডেকেয়ার নাইট কেয়ার চালু করে অল্প দিনেই বিদ্যালয়ের সুনামবৃদ্ধি করতে সমর্থ হন। জুনিয়র বৃত্তি পরিক্ষায় আশাতীত ফলাফলসহ ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বিষয়েও এলেঙ্গা হাইস্কুল সকলের মন জয় করতে সক্ষম হন।
তিনি বিদ্যালয়ে যোগদান করাকালীন সময়ে শিক্ষক কর্মচারীদের ১০ বছরের বেতন বকেয়া ছিল।
নাজমূল করিম তার মনন,মেধা, দক্ষতায় অল্পদিনের মধ্যেই বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নসহ শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন হালনাগাদ পরিশোধ করেন। সরকারি বেসরকারী অনুদান ও বিদ্যলয়ের আয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে এলেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয় ।তিনি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্য ৩ গুন বৃদ্ধি করতে সক্ষম হন। শ্রেণী শাখা ও ভোকেশনাল ট্রেড কোর্স চালু করার ফলে শিক্ষক কর্মচারী সংখ্য বর্তমানে ৪০ জন, শ্রেণী কার্যক্রম চলে ১৯টি ।
এলেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো নান্দনিকতা পায়। নাজমূল করিম এলেঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়কে নিয়ে যান অনন্য উচ্চতায়। তার অভাবনীয় সাফল্যে একটি প্রতিহিংসা পরায়ন গোষ্ঠী ঈর্ষা কাতর হয়েই তার বিরোদ্ধ অপপ্রচার চালানোসহ কতিপয় ব্যক্তিকে তার পিছে লেলিয়ে দিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে প্রধান শিক্ষক নাজমূল করিম জানিয়েছেন।