বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৩

যাত্রীর ফেলে যাওয়া ১লাখ ৩০ হাজার টাকা ফিরিয়ে দিলেন অটোচালক রাসেল

মদনে যাত্রীর ফেলে যাওয়া টাকার ব্যাগ ফিরিয়ে দিলেন রাসেল মিয়া নামের এক অটোরিক্সা চালক।

গতকাল সোমবার রাত ১১টায় মদন বাজার কমিটির সাবেক সভাপতি আবু সাদেক আকন্দের চেম্বারে রহিমা আক্তারের কাছে তার ব্যাগটি ফেরত দেওয়া হয়। 

এতে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ও জামাকাপড় ছিল।অটোচালক রাসেল মিয়ার বাড়ি মদন সদর ইউনিয়নের কুলিয়াটি দক্ষিণপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে।


জানা গেছে, রহিমা আক্তার পার্শ্ববর্তী আটপাড়া উপজেলার তারাচাপুর গ্রামের ওয়াছকরুনীর স্ত্রী। সোমবার ১৭ অক্টোবর বিকেলে মদন ব্রাক অফিস থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার একটি ঋণ উত্তোলন করেন। 

তার স্বামী ওয়াছকরুনী মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন থাকায় টাকার ব্যাগ নিয়ে হাসপাতালে যান। রহিমার ননদ তারিফা আক্তার তার অসুস্থ ভাইকে দেখতে হাসপাতালে আসেন।

পরে তারিফা তার বাবার বাড়ি আটপাড়া উপজেলা তারাচাপুর গ্রামে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হলে রহিমার সঙ্গে থাকা টাকার ব্যাগ তার স্বামীর ছোট বোনের কাছে দিয়ে দেন। তারিফা আক্তার টাকার ব্যাগ অটোরিকশা ফেলে বাড়িতে যাওয়ার পর ব্যাগের কথা মনে পড়ে। তখন খুঁজাখুঁজি করে না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন।

এদিকে, অটোরিক্সা চালক রাসেল মিয়া সোমবার সন্ধ্যায় বাড়িতে ফিরে গাড়িতে টাকার ব্যাগ পেয়ে তার বাবাকে বিষয়টি বলেন। রাসেল তার বাবার পরামর্শে অটোস্ট্যান্ডের মাস্টার ছোট্রন মিয়াকে জানালে তিনি অটোস্ট্যান্ডের সভাপতি কামরুল মিয়াকে জানান।

কামরুল মিয়া স্ট্যান্ডে চালকদের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং প্রকৃত মালিককে খোঁজাখুঁজি করে সন্ধান পান। ব্যাগের মালিক রহিমা আক্তারকে খবর দিয়ে এনে রাত ১১ টার দিকে মদন বাজার কমিটির সাবেক সভাপতি আবু সাদেক আকন্দের চেম্বারে টাকার ব্যাগটি রহিমাকে বুঝিয়ে দেন।

রহিমা আক্তার বলেন, ‘মদন ব্র্যাক অফিস থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ঋণ উত্তোলন করেছিলাম। টাকাটা না পেলে আমার খুব বড় ক্ষতি হয়ে যেত। অটোরিক্সা চালক রাসেল মিয়া টাকার প্রতি লোভ না করে ফেরত দিয়ে বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা করেছেন।’

অটো রিক্সা চালক রাসেল মিয়া বলেন, ‘আমি হাসপাতালের সামনে থেকে যাত্রী এনে মদন বাজার নামিয়ে দিয়ে বাড়িতে গিয়ে দেখি আমার গাড়িতে একটি ব্যাগ। ব্যাগ খুলে দেখি অনেক টাকা এবং কিছু কাপড়-চোপড়। পরে আমার বাবাকে জানালে বাবার পরামর্শে স্ট্যান্ডের সভাপতিকে জানাই। পরে প্রকৃত মালিকের সন্ধান পেলে তার হাতে টাকাটা সহ ব্যাগটি তুলে দিই।’

তিনি আরও জানান, ‘আমার অন্যের জিনিসপত্রের প্রতি কোনো লোভ নেই। আমি অটো রিক্সা চালিয়ে যা আয় করি তাতে আমার সংসার চলে যায়।

অটোস্ট্যান্ডার সভাপতি কামরুল ইসলাম আকন্দ বলেন, ‘অটোচালক রাসেল আমাকে জানালে আমি স্ট্যান্ডের চালকদের সঙ্গে আলোচনা করি। পরে রাতেই ব্যাগের মালিকের সন্ধান পাই। রাসেলকে নিয়ে টাকার ব্যাগের মালিকের কাছে ফেরত দেই।সে আরও কয়েকবার মানুষের টাকা স্বর্ণালঙ্কারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র আমার মাধ্যমে ফেরত দিয়েছে।’

মদন বাজার কমিটির সাবেক সভাপতি আবু সাদেক আকন্দ বলেন, ‘এখনকার সময় এরকম সৎ মানুষ পাওয়া খুব কঠিন। রাসেল অটোচালক হয়েও টাকার প্রতি লোভ না করে টাকার ব্যাগটি ফেরত দিয়েছে।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.