টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কে ঘাটাইলের দেউলা বাড়ি ও মধুপুরের রক্তিপাড়ার মধ্যবর্তী স্থানে মাদারগঞ্জ স্পেশাল নৈশ বাসে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় ৭জন আহত হয়েছেন।
ডাকাতদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে দুইজনকে আশংকাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ডাকাতদের ছুরিকাঘাতে মারাত্মক জখম হওয়া কয়েকজনকে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৩ এপ্রিল) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মাদারগঞ্জ স্পেশাল নৈশ বাসে এই দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনাটি ঘটে। বাসের যাত্রী রবিউল ইসলাম জানান, মহাখালী থেকে রাত ১০টার দিকে মাদারগঞ্জ স্পেশাল এক্সপ্রেস নামে বাসটি ৩৮-৪০জন যাত্রী নিয়ে মাদারগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে আসে।
পথিমধ্যে আশুলিয়ার বাইপাইল টিকিট কাউন্টারে এসে বাসটি বিরতি দেয়। এ সময় ওই কাউন্টার থেকে ৮-১০ জনের সংঘবদ্ধ ডাকাতদল টিকিট কেটে গাড়িতে উঠে। যাত্রীবাহী বাসটি ঘাটাইলের দেউলাবাড়ি এসে পৌঁছলে ডাকাতদল মুখে মাস্ক পড়ে বাসের চালক ও সহযোগীদের দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে যাত্রীদের এলোপাতারিভাবে আঘাত করতে থাকে এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বর্ণালংকার, টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।
জামালপুর সদরের যাত্রী তারা মিয়া(৪০) টাকা বের করতে অস্বীকৃতি জানালে তার পেটে ডাকাত দলের এক সদস্য ক্ষুর দিয়ে আঘাত করলে তার ভুঁড়ি বেরিয়ে পড়ে। সরিষাবাড়ি উপজেলার সাতপোয়া গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী কাকলি বেগমের(৩৫) হাতে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে। বাসের আহতদের রক্তে জামাকাপড় ভিজে যায়।
অনেকেই ভয়ে স্বর্ণালঙ্কার, টাকা-পয়সা ও মোবাইল ফোন ডাকাতদের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হয়। পরে ডাকাতদল মধুপুরের রক্তিপাড়া তেলের পাম্পের উত্তর পাশে নরকোণা নামক স্থানে নেমে যায়। নৈশ বাসের চালক আহতদের চিকিৎসার জন্য বাসটি মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
যাত্রীদের মধ্যে জামালপুর সদর উপজেলার মেষ্টা গ্রামের মসির উদ্দিনের ছেলে তারা মিয়া (৪০) ও সরিষাবাড়ী উপজেলার সাতপোয়া গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী কাকলি বেগমের(৩৫) অবস্থার অবনতি হলে তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। অন্যদের মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ডাকাতরা নৈশ বাসের যাত্রীদের কাছ থেকে পাঁচ লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে গেছে বলে যাত্রীরা জানান। মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মাজহারুল আমিন জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার প্রক্রিয়া চলছে। বাসটি মধুপুর থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ডাকাতির ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।