বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩

টাঙ্গাইলে ইউপি চেয়ারম্যানের অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল! সমালোচনার ঝড়

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলা নারান্দিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদ তালুকদারের অশ্লীল ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। 

বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নারীদের অনৈতিক প্রস্তাব ও হেনস্তা করার অভিযোগ ওঠেছে নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ তালুকদারের বিরুদ্ধে।

ভাইরাল হওয়া অশ্লীল ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর তীব্র সমালোচনার ঝড় বইছে। অনেকেই তার পদত্যাগ ও শাস্তি দাবি করছেন। তবে ইউপি চেয়ারম্যানের দাবি ষড়যন্ত্রকারীরা এডিট করে তার ভিডিও ছেড়ে তাকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছে।ওই চেয়ারম্যানের হাত থেকে রেহাই পায়নি ছেলেরাও। উপকারভোগী নারী ও ছেলেদের সঙ্গে মোবাইলে ভিডিও কলে আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি করতেন। 

আর এরকম অশ্লীল আপত্তিকর ভিডিও পুরো ইউনিয়নবাসীর মোবাইল ফোনে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর এই ভিডিও যুগান্তরের কাছেও এসেছে।স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, একজন জনপ্রতিনিধি এ রকম কাজ করবেন এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তারা দ্রুত এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।

জানা যায়, ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার ৪নং নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে মো. মাসুদ তালুদার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেন। ইউনিয়ন পরিষদে আসা সেবাপ্রার্থী নারীদের বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে তাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। আর ওইসব নারীর মোবাইল নম্বর রেখে দেন।

পরবর্তীতে তাদের সঙ্গে বিভিন্ন সময় কথাবলাসহ ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার বা ইমোতে ভিডিও কলে কুপ্রস্তাব ও বিভিন্ন ধরনের আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি করে নগ্ন হয়েও দেখাতেন নারীদের। এ নিয়ে লোকলজ্জার ভয়ে কোনো নারীই চেয়ারম্যানের এই অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পেতেন না।নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী এক নারী জানান, কয়েক মাস আগে তিনি ইউনিয়ন পরিষদে যান তার সন্তানের জন্মনিবন্ধন এবং চেয়ারম্যান সার্টিফিকেটের জন্য। ওই সময় চেয়ারম্যান তাকে পরদিন যেতে বলেন। 

তার কথামতো তিনি পরদিন আবার ইউনিয়ন পরিষদে গেলে তিনি তাকে পরিষদ ভবনের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যান এবং তার মোবাইল নাম্বার নেন। এরপর তিনি (চেয়ারম্যান) তাকে সার্টিফিকেট ও জন্মসনদ দ্রুত পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। এরপর থেকেই চেয়ারম্যান তাকে প্রতিনিয়তই তার মোবাইলে ফোন করতে থাকেন।একপর্যায়ে তার সঙ্গে ফেসবুকেও সংযুক্ত হন চেয়ারম্যান মাসুদ তালুকদার। 

কিছুদিন পর ফেসবুক ম্যাসেঞ্জরে ভিডিও কল দিয়ে তাকে কুপ্রস্তাব এবং নগ্ন হয়ে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করতে থাকেন। পরে ভিডিও কলটি স্ক্রিনশট দিয়ে রেখে দেন তিনি (ওই নারী)। পরবর্তীতে ওই নারী ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বললে চেয়ারম্যান তাকে মোবাইলে ফোন করে বিরক্ত করা বন্ধ করে দেন।নাম প্রকাশ না করার শর্তে নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন ইউপি সদস্য জানান, চেয়ারম্যানের আপত্তিকর ভিডিও বিষয়টি নিয়ে পুরো ইউনিয়নে সমালোচনা শুরু হয়েছে। 

ভিডিওটি তারাও দেখেছেন। এটা তাদের এবং ইউনিয়নবাসীর জন্য লজ্জাজনক বিষয়। একজন জনপ্রতিনিধির এমন আচরণ ইউনিয়নবাসীর মানুষ প্রত্যাশা করেনি।

এ বিষয়ে নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাসুদ তালুকদার জানান, আপত্তিকর ভিডিওটি এডিট করা। প্রতিপক্ষরা তাকে ফাঁসাতে এ রকম ভিডিও বানিয়ে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।এ বিষয়ে কালিহাতী থানায় জিডি ও টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তালুকদার জানান, আপত্তিকর ভিডিও, এটা নোংরামি। তাই বিষয়টি চেয়ারম্যানের কাছেই জিজ্ঞাসা করা ভালো।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.