রবিবার, ১ জানুয়ারী, ২০২৩

সখীপুরে বাঁশের তৈরি আসবাব বিক্রি করে সংসার চলে বৃদ্ধার

আহমেদ সাজু (সখীপুর)টাঙ্গাইলঃ টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কাহারতা গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা বাদশাহ( ৭২)মিয়ার জীবন সংসার কল্প-কাহিনীকেও হার মানায়। বাদশাহ মিয়ার পূর্ব-পুরুষের সামাজিক অবস্থা যথেষ্ট সচ্ছলতার প্রমাণ মেলে।

কিন্তু ভাগ্যে-বিড়ম্বনার স্বীকার হয়ে তার সংসার শোচনীয়। বাদশাহ মিয়া অভাবে সংসারে পাঁচ ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার গন্ডি বেশ দূর এগোতে পারেনি। কিশোর বয়সে তাদের দিয়ে নানারকম শিশুদের ঝুঁকি পূর্ণ কাজে লাগানো হয়েছে। সংসারের অভাবে হাল ধরতে সন্তানদের অন্যের বাড়ির কাজ করিয়েছেন।

বাদশাহ মিয়ার শরীর আর চলে না,শরীরে নানানরকম অসুখে বাসা বেঁধেছে।ভালো কোন ডাক্তার দেখাবো সে সুযোগ  নেই। এদিকে ছেলে- মেয়ে বড় হয়ে তারা নিজেদের মতো আলাদা  সংসার করছে। তাদেরও  তেমন রোজগার নেই, সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়।আমারও বাড়ি ভিটে ছাড়া তেমন জমা-জমি  নাই। আমার সন্তানদের সবকিছু কিনেই খেতে হয়।তারা অন্যের জমি বর্গা নিয়ে সংসারের ব্যয় ঘোচাতে 
রাতদিন পরিশ্রম করছে।

গতকালই কথা হয় প্রতিবেদকের সাথে তিনি বলেন, এখন আর আগের মতো চোখে দেখিনা, ডান চোখ দিয়ে পানি পড়ে। এই বয়সে ভারি কোন কাজ তো আমার পক্ষে সম্ভব নয়।বাঁশের ঝাড়ু, কুলা,টেফাড়িমত গুরুত্বপূর্ণ আসবাব বাড়িতে বসে বানিয়ে বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি করে বাজার সদাই ও চিকিৎসার খরচ বহন করি।তিনি আরও বলেন, আমার এ কাজের মধ্যেই আমি আনন্দ পাই।

বাদশাহ মিয়ার বড় ছেলে অটোচালক কালাম মিয়া জানান, বাবাকে দেখেছি অনেক ছোট সময় থেকে কঠোর পরিশ্রম করে। আমাদের ভাইদেরও টানাটানির সংসার তবুও চেষ্টা করি সবাই যার যার অবস্থান থেকে পাশে থাকার।বাবার এ কাজে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থাকায় নিত্য ব্যবহার্য জিনিসের কদর আশেপাশের এলাকার মানুষের কাছে রয়েছে।এতে আমরা গর্ববোধ করি এবং খুশিও হই।

বাদশাহ মিয়ার প্রতিবেশী স্কুল শিক্ষক হারুন অর রশিদ জানান, তিনি একজন সহজ-,সরল মানুষ। আমার বাড়ির কাছের হিসেবে সুখে-দুঃখে পাশে থাকার চেষ্টা করি।নম্র প্রকৃতির গুণী মানুষটি সুস্বাস্থ্যে কামনা করি।
এবিষয়ে সখীপুর পৌরসভা ২নংওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফজলুর রহমান বলেন, মুরব্বিরা আমাদের চলার পথের দিশারী।ওনি একজন সাদামনের মানুষ। অবশ্যই পৌরসভার মাধ্যমে কোন সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা  হলে বাদশার মিয়ার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.