শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২

ভালুকায় এক খামার থেকেই ১৪ লাখ টাকার গরু নিয়েছে সংঘবদ্ধ চোর চক্র

মুহাম্মদুল্লাহ: ময়মনসিংহের ভালুকার ডাকাতিয়া গ্রামের এক খামার থেকেই প্রায় ১৪ লাখ টাকার গরু নিয়ে গেছে সংঘবদ্ধ চোর চক্র। 

গতকাল শুক্রবার রাতে এই ঘটনা ঘটে। খামারের মালিক মিন্টু বলেন, রাত আনুমানিক চারটার দিকে খবর পাই আমার খামারে চোর এসেছে। সাথে সাথে গিয়ে দেখি খামারের সবগুলো গরু গাড়িতে তোলা শেষ। আমাদের দেখে তারা গাড়ি টান দিয়ে চলে যায়। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধারালো অস্ত্র দিয়ে খামারের গেইটের তালার আংটা ভাঙা হয়েছে। প্রত্যেকটি গরুর রশি কাটা হয়েছে এবং বাল্বের আলোতে তাদের ছায়া যেন বাইরে থেকে দেখা না যায়, তাই প্লাস্টিকের বালতি দিয়ে বাল্ব ঢেকে নেয়া হয় বলে অনুমান করা হয়। ঘটনাস্থলে একটি ধারালো ছুরি ও একটি কাঁচি পাওয়া গেছে। 

চোর সংঘবদ্ধ ছিল উল্লেখ করে মিন্টু বলেন, আমাকে দেখেই তাদের একজন বলে ওঠে ওকে গুলি কর। এরপরে তারা গাড়ি নিয়ে দ্রুত গতিতে চলে যায়। 

মিন্টু বলেন, তারা ডাকাতিয়া চৌরাস্তা থেকে আড়াইপাড়া হয়ে কচুয়া বাজার পৌঁছালে তাদের সাথে একটি প্রাইভেট গাড়ি মিলিত হয়। প্রাইভেট গাড়ি পেছনের গরুবাহী বড় ট্রাককে রাস্তা করে নিয়ে যাচ্ছিল। আমরা দুই ভাই মোটরসাইকেল যোগে তাদেরকে ধাওয়া করেও গতিরোধ করতে পারিনি। ওই সময় ডাকাতিয়া চৌরাস্তা, আড়াইপাড়া এবং কচুয়া বাজারের নৈশপ্রহরীদের ফোন করে জানানো হলে তারাও চোরদের গতিরোধে ব্যর্থ হন। 

খামারি মিন্টু বলেন, তিলেতিলে গড়ে তোলা আমার স্বপ্ন ও পরিশ্রম এক রাতেই শেষ হয়ে গেল। আমি দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে টাকা জমিয়ে প্রায় ১৫ লাখ টাকা দিয়ে এই খামার গড়ে তুলেছিলাম। দিনরাত খামারেই পরিশ্রম করতাম। আমার জীবিকা নির্বাহের এই ছিল একমাত্র সম্বল। খামারের সবগুলো গরু ছিল বাছাই করা উন্নত হলিস্টিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের। 

মিন্টু বলেন, খামারে গরু ছিল ৭ টি। এর মধ্যে দুইটা ছিল ছোট গরু। আর সবগুলোই বড় গরু। আমার খামারের এক গরুই গত পরশু দাম উঠেছিল তিন লাখ টাকার ওপরে। কারণ, সেটা ছিল বাছাই করা গরু। যেটি প্রত্যেক দিন প্রায় ২২ লিটার দুধ দিত। এক রাতেই আমার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। 

প্রাথমিকভাবে থানায় জানানো হয়েছে। এছাড়াও মামলার প্রক্রিয়া চলমান আছে বলে নিশ্চিত করেছেন খামারি মিন্টু। 

স্থানীয়রা জানান, প্রায় প্রতি রাতেই আমাদের গ্রামে চুরির ঘটনা ঘটছে। বাসাবাড়িতে হানা দিয়ে গৃহপালিত গবাদিপশু-মুরগি, খেতের ফসল, খামারের মাছ চুরি করছে। গভীর রাতে চুরি সংগঠিত হচ্ছে বলে কেউ চোরদের ধরতেও পারছে না। আবার কোনো কোনো জায়গায় দিনের বেলায়ও চুরি হচ্ছে। 

স্থানীয়দের কেউ কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রশাসন চাইলে এই চুরি বন্ধ করতে পারে। কিন্তু, তাদের সেরকম কোনো পদক্ষেপ লক্ষ করা যাচ্ছে না। এরকম চলতে থাকলে তো আমাদের বেঁচে থাকাই কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.