Breaking News

বিশ্বকাপের খেলা চলাকালীন বিদ্যুৎ যাবে না

কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর বসছে আজ থেকে। সারা বিশ্বের শত শত কোটি মানুষ টিভি পর্দায় প্রায় সব খেলাই উপভোগ করবেন, বাদ পড়বে না বাংলাদেশও। কিন্তু বাংলাদেশের দর্শকরা লোডশেডিং পরিস্থিতির কারণে প্রিয় দলের খেলা দেখতে পারবেন কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। 

যদিও বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে বলা হচ্ছে- লোডশেডিং পরিস্থিতি এখন নেই বললেই চলে। আর বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা চলাকালে কোথাও লোডশেডিং যেন না হয় সেদিকে নজর রাখার জন্য সবাইকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সারাদেশের মানুষই এখন বিশ্বকাপ ফুটবলের উন্মাদনায় মেতেছেন। ধানমণ্ডি এলাকার বাসিন্দা রাজীব আর্জেন্টিনার সমর্থক। বিশ্বকাপ ঘিরে তার উচ্ছ্বাসের শেষ নেই। বিশ্বকাপের ফিকশ্চার দেখে প্রিয় দলের খেলার সময় চিহ্নিত করে রেখেছেন। কিন্তু উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি লোডশেডিংয়ের বিষয়টি তাকে আশঙ্কায়ও রেখেছে।

খেলার সময় যদি লোডশেডিং হয় তাহলে সর্বনাশ হয়ে যাবে, মেসি ও আর্জেন্টিনাকে মিস করবেন। একই ধরনের আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন ব্রাজিলের সমর্থক আফরোজ। প্রিয় দলের খেলা দেখার সময় যদি লোডশেডিং হয় তাহলে তিনি খেলা দেখা থেকে বঞ্চিত হবেন। খেলার সময় লোডশেডিং নিয়ে সব বয়সি ফুটবলপ্রেমিক মানুষের কপালে চিন্তার ভাঁজ। 

অনেকেই বিশ্বকাপের খেলার সময় লোডশেডিং না দেয়ার জন্য নিকটস্থ ডিপিডিসি ও ডেসকো অফিসে গিয়ে অনুরোধ জানিয়েছেন। রাজধানীর বাইরে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসগুলোতেও অনেকে ফোন করে খেলার সময় লোডশেডিং না দেয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) সূত্রে জানা গেছে, এই মুহূর্তে ডিপিডিসি এলাকায় কোনো লোডশেডিং নেই। চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত থাকায় লোডশেডিংয়ের প্রয়োজন হচ্ছে না। তবে সরকারের ন্যাশনাল লোড ডেসপাচ সেন্টারের (এনএলডিসি) বিদ্যুৎ বরাদ্দের ভিত্তিতে কোনো কোনো এলাকায় লোডশেডিং আরোপিত হতে পারে। লোডশেডিংয়ের হালনাগাদ তথ্য জানার জন্য সময়ে সময়ে ডিপিডিসির ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে।

ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান জানান, শীতকাল শুরু হওয়ায় এমনিতেই বিদ্যুতের চাহিদা কমেছে। এনএলডিসির বরাদ্দের ওপর ডিপিডিসির লোডশেডিং পরিস্থিতি নির্ভর করে। বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা দিলে অর্থাৎ সরবরাহ কম পাওয়া গেলে লোডশেডিং করতে হয়। পর্যাপ্ত বরাদ্দ পাওয়া গেলে লোডশেডিংয়ের প্রয়োজন হয় না। এক মাস আগেও রাত ও দিন মিলিয়ে ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল।

প্রায় ১ মাস ধরে ডিপিডিসির এলাকায় লোডশেডিংয়ের প্রয়োজন হচ্ছে না। এক মাস আগেও ঘন ঘন লোডশেডিং দিতে হয়েছে। এখন ঘাটতি না থাকায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আশা করছি ডিপিডিসির গ্রাহকরা বিশ্বকাপ ফুটবলের খেলা চলাকালে লোডশেডিংয়ের সমস্যায় পড়বেন না। ঘাটতি দেখা দিলেও খেলার সময় যেন লোডশেডিং করা না হয় সেজন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) ব্যাবস্থাপনা পরিচালক কাওসার আমীর আলী জানান, তাদের আওতাভুক্ত এলাকায় আগস্ট মাসে প্রায় ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল। এ কারণে সরকারের এক ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের সূচি মানা সম্ভব হয়নি। কিন্তু এখন ঘাটতি অনেক কমেছে, পাশাপাশি ভোগান্তিও কমেছে।


বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীসহ সারাদেশের লোডশেডিং পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে। ন্যাশনাল লোড ডেসপাচ সেন্টারের হিসাবে দুই মাস আগে সারাদেশে গড়ে ১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা ছিল। মূলত শীত বাড়তে থাকায় এখন বিদ্যুতের ব্যবহার অনেক কমেছে। ফ্যান, এসির ব্যবহার গরমকালে ২৪ ঘণ্টা চলতে থাকে। তাই গত সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে দেড় থেকে দুই হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল। এখন সেটা ৫০০ মেগাওয়াটের নিচে নেমে এসেছে। ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত শীত আরো বাড়বে এবং বিদ্যুতের ব্যবহার আরো কমবে। ঢাকায় অসহনীয় লোডশেডিং কমে সহনীয় হয়েছে। বিদ্যুতের উৎপাদন এবং সরবরাহ বাড়ায় ডিপিডিসি ও ডেসকোর ঘাটতিও কমেছে। মার্চ পর্যন্ত লোডশেডিং অবস্থার আরো উন্নতি হবে।


বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, বিদ্যুতের ঘাটতি কম থাকায় সারাদেশেই লোডশেডিং কমেছে। ডিসেম্বরে আরো কমবে। বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা চলাকালে লোডশেডিং পরিস্থিতির অবনতি যেন না হয়, সেজন্য পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

Type and hit Enter to search

Close