INFO Breaking
Live
wb_sunny

Breaking News

সখীপুরে ভূয়াইদ যুব সংঘের উদ্যোগে শেখ রাসেলের ৫৯ তম জন্মদিন উদযাপন

সখীপুরে ভূয়াইদ যুব সংঘের উদ্যোগে শেখ রাসেলের ৫৯ তম জন্মদিন উদযাপন

খাঁন আহম্মেদ হৃদয় পাশা, সখীপুর(টাঙ্গাইল)প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের "ভূয়াইদ  যুব সংঘ"আয়োজিত শেখ রাসেল দিবস ও শহীদ শেখ রাসেলের ৫৯ তম জন্মদিন উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা আয়োজনে আলোচনা সভা, কোরআন তেলওয়াত, কেক কাটা,তোবারক বিতরণ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে ভূয়াইদ টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট এন্ড বিএম কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ শামসুল হকের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন সখীপুর উপজেলা ছাত্র লীগের আহ্বায়ক রাসেল আল মামুন, কাকড়াজান ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহসভাপতি আব্দুল মান্নান সিকদার, ভূয়াইদ টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট এন্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ মেহেদী হাসান জুয়েল, স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা জয়নাল আবেদীন, তৈয়ব আলী, তুলা মিয়া, কাকড়াজান ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ডিএম রাব্বি, বহুরিয়া ইউনিয়ন ছাত্র লীগের আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন, হেলাল সরকার, খালেক ভেন্ডার, আবুল হোসেন, সোনা মিয়া,নুর আলম, পিয়ার আলী, সেন্টু, রফিকুল ইসলাম, রশিদ, সিফাত, নাহিদ, রনি,রিফাত, মেহেদী,সহ বিভিন্ন শ্রেণীর পেশার মানুষ ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ প্রমুখ। 

এসময়ে ভূয়াইদ যুব সংঘের উপদেষ্টা খাঁন আহম্মেদ হৃদয় পাশা সঞ্চালনার শুরুতে
শেখ রাসেলের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন,

১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর 
ধানমন্ডির বিখ্যাত ৩২ নম্বর রোডের 
৬৭৭ নম্বর বাড়িতে শেখ মুজিবুর রহমানের 
ঐতিহাসিক বাড়িটি আলোকিত করে 
জন্ম নিলেন শেখ রাসেল বড়ো ভাই। 

শেখ রাসেলের যেদিন জন্ম হয় 
বঙ্গবন্ধু সেদিন ফাতেমা জিন্নাহর পক্ষে 
প্রচারণায় অংশগ্রহণের জন্য
চট্টগ্রামে অবস্থান করছিলেন।
সেইদিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা 
জননেত্রী শেখ হাসিনা লিখেছেন,
“রাসেলের জন্মের আগের
মুহুর্তগুলো ছিল ভীষণ উৎকন্ঠার।
অমি, কামাল, জামাল, রেহানা ও
খোকা চাচা বাসায়। 
বড় ফুফু ও মেঝ ফুফু মার সাথে।
একজন ডাক্তার ও নার্সও এসেছেন।
সময় যেন আর কাটে না। 
জামাল আর রেহানা কিছুক্ষণ ঘুমায়
আবার জেগে ওঠে। 
আমরা ঘুমে ঢুলুঢুলু চোখে জেগে আছি 
নতুন অতিথির আগমন বার্তা
শোনার অপেক্ষায়। 
মেঝ ফুফু ঘর থেকে বের হয়ে 
এসে খবর দিলেন আমাদের ভাই হয়েছে। 
খুশিতে আমরা আত্মহারা। 
কতক্ষণে দেখবো। 
ফুফু বললেন, তিনি ডাকবেন।
কিছুক্ষণ পর ডাক এলো। 
বড় ফুফু আমার কোলে তুলে দিলেন রাসেলকে। 
মাথাভরা ঘন কালোচুল। 
তুলতুলে নরম গাল। 
বেশ বড় সড় হয়েছিল রাসেল।”

রাসেল নামটি রেখেছিলেন
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। 
তাঁর প্রিয় লেখক ছিলেন বার্ট্রান্ড রাসেল। 
পৃথিবী বিখ্যাত ব্রিটিশ দার্শনিক
সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত
বার্ট্রান্ড রাসেলের নামের সঙ্গে মিলিয়ে 
তিনি পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ 
সদস্যের নাম রাখলেন রাসেল, 
শেখ রাসেল। বার্ট্রান্ড রাসেল
কেবলমাত্র একজন দার্শনিকই ছিলেন না। 
বিজ্ঞানী ছিলেন। 
ছিলেন পারমাণবিক যুদ্ধ বিরোধী
আন্দোলনের একজন 
বড় মাপের বিশ্ব নেতাও। 
বিশ্ব শান্তি রক্ষার জন্যে 
বার্ট্রান্ড রাসেল গঠন করেছিলেন
কমিটি অব হানড্রেড। 
এই পৃথিবীটাকে মানুষের 
বসবাসের জন্য সুন্দর ও 
শান্তিময় করার লক্ষ্যে 
কাজ করে গেছেন তিনি নিরলস।

১৯৭৩ সালের ২৩ মে 
বিশ্ব শান্তি পরিষদ 
জাতির পিতা  বঙ্গবন্ধু 
শেখ মুজিবুর রহমানকে 
জুলিও কুরি 
শান্তি পদকে ভূষিত করে। 
শিশু রাসেলের জীবনের 
বেশিরভাগ সময় কেটেছে 
বাবাকে ছাড়াই। 
কারণ তার বাবা 
রাজনৈতিক বন্দি হয়ে 
কারাগারে ছিলেন দীর্ঘদিন।

বাবাকে দেখতে না পেয়ে 
মা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে 
আব্বা বলে সম্বোধন করতেন রাসেল। 
এই চাপা কষ্ট যেমন অনুভব করতেন 
ছোট্ট শিশু রাসেল, ঠিক তেমনি 
তার বাবা শেখ মুজিবও। 
যা স্পষ্টত ফুটে উঠেছে 
বঙ্গবন্ধুর লেখা অসমাপ্ত
আত্মজীবনীতেও।

১৯৬৬ সালের ৬ দফা 
আন্দোলনের পর থেকেই 
রাজবন্দি হিসেবে জেলে ছিলেন বঙ্গবন্ধু। 
কারাগারে দেখা করার সময় 
রাসেল কিছুতেই তার বাবাকে 
রেখে আসবে না। 
এ কারণেই তার 
মন খারাপ থাকতো।

‘কারাগারের রোজনামচা’য় 
শেখ রাসেলকে নিয়ে 
বঙ্গবন্ধু লিখেছেন 
‘৮ ফেব্রুয়ারি ২ বছরের ছেলেটা
এসে বলে, আব্বা বাড়ি চলো। 
’ কী উত্তর ওকে আমি দিব। 
ওকে ভোলাতে চেষ্টা করলাম 
ও তো বোঝে না আমি কারাবন্দি।
ওকে বললাম, ‘তোমার মার বাড়ি তুমি যাও। 
আমি আমার বাড়ি থাকি। 
আবার আমাকে দেখতে এসো।
' ও কি বুঝতে চায়! 
কি করে নিয়ে যাবে 
এই ছোট্ট ছেলেটা, 
ওর দুর্বল হাত দিয়ে মুক্ত করে 
এই পাষাণ প্রাচীর থেকে! 
দুঃখ আমার লেগেছে। 
শত হলেও আমি তো মানুষ 
আর ওর জন্মদাতা। 
অন্য ছেলে-মেয়েরা বুঝতে শিখেছে।
কিন্তু রাসেল এখনো বুঝতে শিখেনি। 
তাই মাঝে মাঝে আমাকে নিয়ে
যেতে চায় বাড়িতে।

‘আমাদের ছোট রাসেল সোনা’ বইয়ের ২১ পৃষ্ঠায় 
কারাগারে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে 
যাওয়ার বিষয়ে শেখ হাসিনা লিখেছেন, 
‘আব্বার সঙ্গে প্রতি ১৫ দিন পর আমরা দেখা করতে যেতাম। রাসেলকে নিয়ে গেলে 
ও আর আসতে চাইত না। খুবই কান্নাকাটি করত। 
ওকে বোঝানো হয়েছিল যে, 
আব্বার বাসা জেলখানা আর আমরা 
আব্বার বাসায় বেড়াতে এসেছি। 
আমরা বাসায় ফেরত যাব। 
বেশ কষ্ট করেই ওকে বাসায় ফিরিয়ে আনা হতো। 
আর আব্বার মনের অবস্থা কী হতো, তা আমরা বুঝতে পারতাম। বাসায় আব্বার জন্য কান্নাকাটি করলে মা ওকে বোঝাতেন এবং মাকে আব্বা 
বলে ডাকতে শেখাতেন। 
মাকেই আব্বা বলে ডাকত। '

শেখ রাসেল ছিলেন ভীষণ দুরন্ত। তার দুরন্তপনার সঙ্গী ছিল বাই-সাইকেল। তিনি রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ছাড়াই সাইকেলে করে স্কুলে যেতেন। পাড়ার আর 
দশজন সাধারণ ছেলের মতো।

"ছোট্র শিশু শেখ রাসেল" শিরোনামে তার জীবনী প্রতিটি পাঠ্য বইয়ে লিপিবদ্ধ করার জোর দাবি জানান ভূয়াইদ যুব সংঘ। 

কি দোষ ছিল ছোট্র শিশু শেখ রাসেলের, তাঁর অপরাধ তার বাবা বঙ্গবন্ধু, অন্যায়ের সাথে আপোষহীন বাঙ্গালী জাতির অগ্র নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

এসময়ে বক্তারা আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন ও হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের আত্ম জীবনী আলোচনা তুলে ধরে বক্তব্য দেন। 
এরপর শহীদ শেখ রাসেলের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও তোবারক বিতরণ করেন।