শনিবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে কালেক্টরেট ঈদগাঁ মাঠে নিত্যপণ্যসহ জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং বিভিন্ন স্থানে গুলিতে নেতা নিহত হওয়ার প্রতিবাদসহ বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে রংপুর বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এ সময় তিনি আরো বলেন, দিনে দিনে যেভাবে নিত্যপণ্যসহ সব জিনিসের দাম বেড়ে যাচ্ছে, এতে করে মানুষ নাজেহাল হয়ে পড়েছে। ক্রয় ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। সাধারণ মানুষ আজ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। হাতেগোনা কিছু লোক ভালো আছে। আমি আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দদের বলতে চাই, সাধারণ মানুষের কাছে যান, দেখুন তারা কিভাবে রয়েছে। এসি রুমে বসে দেশ শাসন করলে চলবে? প্রশাসন দিয়ে মানুষের ভাষা কেড়ে নিলে দেশের মানুষের কি হবে ভেবে দেখেছেন কি?
বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, আপনাদের সময় শেষ হয়ে এসেছে, জনগণ বুঝেছে আপনারা কি চাচ্ছেন। জোর করে বিনা ভোটের মধ্য দিয়ে গদিতে আর থাকতে পারবেন না। তাই আপনাদের বলতে চাই সময় থাকতে সঠিক নির্বাচন দিন। তা নাহলে পালানোর সকল রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। আগামী বছরই আপনাদের বিদায়। জনগণ আজ পথে নেমেছে তারা আপনার বিদায় ঘন্টা বাজিঁয়ে ছাড়বে।
মির্জা ফকরুল আরো বলেন, আমরা বিভাগীয় সমাবেশ করছি। এর আগে খুলনা, চট্রগ্রাম, বরিশালে করেছি, আপনারা সেখানেও গাড়ি ধর্মঘট ডেখেছেন। আজ রংপুরেও ডেকেছেন, আপনারা এতে করে কি লাভ করতে পেরেছেন জানাবেন কি? এতে জনগণের উৎসাহ আরো বেড়েছে। এতে শুধু ভোগান্তি হয়েছে রোগী, ছাত্র-ছাত্রীদেও, তারা পড়েছে বিপাকে ধর্মঘটের কারণে। তারা সেবা নিতে পারছে না। তারা কোথাও যেতে পারছে না। বিএনপির সমাবেশকে আপনাদের কিসের ভয়। আপনারা সমাবেশের ভয়ে জনগণের ক্ষতি করছেন এসব বন্ধ করুন মুক্তধারার রাজনীতি করুন। তা না হলে জনগণ আপনাদের ছেড়ে দিবে না।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি জনগণের রাজনীতি করে, জনগণের জন্য গুলি খেতেও প্রস্তুত। আপনাদের পুলিশ প্রশাসন বিএনপির লোককে নির্যাতন, গুম, গুলি করে হত্যা করছে এর বিচার এই মাটিতেই হবে। আপনারা যা করছেন জনগণ এর জবাব দিচ্ছে আগামীতেও দিবে। সমাবেশে আসতে আমাদের লোকদের পুলিশ বাহিনী দিয়ে বাধাঁ প্রদান করেছেন, হুমকি-ধমকি দিয়েছেন তাতে আপনাদের লাভ কি হয়েছে। জনগণকে ঠেকাতে পারেননি বরং রংপুরের সর্ববৃহৎ সমাগম হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের নেত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির ব্যবস্থা করুন। আজ মানুষ জেগেছে, আপনাদের সময় শেষ হয়ে এসেছে। নেত্রীর মুক্তির মাধ্যমে কিছুটা হলেও ছাড় পাবেন। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমিয়ে ক্রয় ক্ষমতা সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসুন তাহলে আপনাদের হয়তো ভালো হবে। মেগা প্রজেক্টের কাজ কমিয়ে দিন। ডলার বাড়ান, তা না হলে দেশে দুর্ভিক্ষ, খাদ্যর অভাব দেখা দিবে, দেশ দেউলিয়ার পথে যাচ্ছে। দেউলিয়া হলে শ্রীলংকার কি হয়েছে তা তো আপনারা দেখেছেন। তার চেয়েও কঠিন পরিণতি আপনাদের হবে।
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খশরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, যুগ্মমহাসচিব সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদ, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রংপুর মহানগর বিএনপির আহবায়ক সামসুজ্জামান সামু। এ ছাড়াও রংপুুর মহানগরীসহ বিভাগের সকল জেলা ও বিভিন্ন উপজেলার নেতাকর্মীরা সমাবেশে বক্তব্য রাখেন
Social Footer