মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৪

সৌদির সঙ্গে মিল রেখে শরীয়তপুরের ৩০ গ্রামে ঈদের জামাত

সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগেই শরীয়তপুরের সুরেশ্বর দরবার শরীফে হাজারো মুসল্লির অংশগ্রহণে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। নামাজ শেষে রোজা কবুলের ফরিয়াদ ও বিশ্ব উম্মাহর জন্য শান্তি কামনা করেছেন দরবার শরীফের ভক্ত-অনুরাগী মুসল্লিরা।

বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯ টায় দরবার শরীফের ঈদগাহ মাঠে পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত জামাত দুইটিতে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ভক্ত ও সুরেশ্বর দরবার শরীফের আশেপাশের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মুসল্লি অংশ নিয়েছেন।

সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে প্রায় ১০০ বছরের ঐতিহ্য হিসেবে পালিত পবিত্র ঈদুল ফিতরের পৃথক জামাত দু’টিতে ইমামতি করেছেন শাহ সুফি সৈয়দ বেলাল নূরী আল সুরেশ্বরী ও মাওলানা মো. জুলহাস উদ্দিন।

জানা যায়, জান শরীফ শাহ সুরেশ্বরী নামে এক সুফি সাধক কর্তৃক শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত সুরেশ্বর পাক দরবার শরীফের কয়েক লাখ ভক্ত ও অনুরাগী রয়েছেন সারাদেশে। পিরোজপুর, ভোলা, মাদারীপুর, চাঁদপুর, নারায়ণগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোণাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব ভক্ত ও অনুরাগীরা ১৯২৮ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশের একদিন আগেই রোজা ও ঈদ পালন করে থাকেন। 

এর মধ্যে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর, কেদারপুর, চাকধ্, চন্ডিপুর ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ দারাগড়সহ ৩০ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে আজ বুধবার পবিত্র ঈদুল ফিতর পালন করছেন। প্রতি বছরের মতো এবছরও সুরেশ্বর দরবার শরীফে একই সময়ে পৃথক মাঠে ঈদুল ফিতরের নামাজের দুইটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। জামাত দুইটিতে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ভক্ত-অনুরাগী ও স্থানীয় ৩০ গ্রামের প্রায় সাড়ে তিন হাজার নারী-পুরুষ ঈদের নামাজে অংশ নিয়ে রোজা কবুলের ফরিয়াদ ও বিশ্ব উম্মাহর জন্য শান্তি কামনা করেনগাজীপুর থেকে সুরেশ্বর দরবার শরীফে ঈদের নামাজ আদায় করতে এসেছেন সৈয়দ মাইনুল হক। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাবা সুরেশ্বরীর দরবারের মাটিতে পা রাখলে আমার অন্তর শীতল হয়ে যায়। রমজানের রোজা শেষে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করলাম। এখন সকলের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে বাড়িতে গিয়ে সবার সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করব।

জুলহাস হাওলাদার নামে স্থানীয় এক মুসল্লি বলেন, আমার বাপ-দাদাও সুরেশ্বর দরবার শরীফের নিয়ম মেনে রোজা ও ঈদ পালন করত। আমরা তাদেরই ধারাবাহিকতায় ধর্ম পালন করে থাকি। পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করলাম। এখন সকলের সঙ্গে কুশল বিনিময় শেষে পায়েস খাব।

নামাজ শেষে  কথা হয় দরবার শরিফের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (প্রধান খাদেম) মুনছুর আলী মৃধার। তিনি বলেন, শরীয়তপুরসহ বিভিন্ন জেলার প্রায় সাড়ে তিন হাজার ভক্ত-অনুসারী সুরেশ্বর দরবার শরীফে অনুষ্ঠিত পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজে অংশ নিয়েছেন। সারাদেশে সুরেশ্বর দরবার শরীফের প্রায় ১০ লাখ ভক্ত রয়েছে। এর মধ্যে ৫০ হাজারেরও বেশি অনুসারী নিজ নিজ এলাকায় ঈদের নামাজের মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন।

সুরেশ্বর দরবার শরীফের গদীনশীন পীর শাহ মুজাদ্দেদী সৈয়দ তৌহিদুল হোসাইন শাহিন নূরী বলেন, রমজান আত্মসংযমের মাস। এই মাসে পবিত্র রোজা পালন শেষে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন ভক্ত ও অনুসারী মুসল্লিরা। 

প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মুসল্লির অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ঈদের নামাজ শেষে রোজা কবুলের ফরিয়াদ ও বিশ্ব উম্মাহর জন্য শান্তি কামনা করছেন তারা। সবাইকে সুরেশ্বর পাক দরবার শরীফের পক্ষ থেকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.