বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের রান্না শেখা। নিজের হাতে কাজ করার মধ্যে যে আনন্দ, তা খুঁজে পায়। শিক্ষার্থীদের কৃষিসহ নানা বিষয়ে দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে নতুন শিক্ষা পদ্ধতিতে জীবন ও জীবিকা নামের পাঠ্য বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ওই বইয়ের একটি অধ্যায় রান্নায় দক্ষতা অর্জন বিষয় শিখতে গিয়ে প্রতিটি বিদ্যালয়ে বসেই রান্না করা শিখছে।
এরই অংশ হিসেবে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার ঘোনারচালা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ৪০জন শিক্ষার্থী তারা নিজের হাতে রান্না করে দুপুরের খাবারের আয়োজন করে।
বুধবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, কেউ পিঁয়াজ কাটছে, কেউ মরিচ কাটছে, কেউ চাল ধুয়ে রান্না বসাচ্ছে, কেউ আলু কাটছে, কেউ ডিমভাজি করছে। কারো ব্যস্ততা চুলায় আগুন জালাতে, কেউ লাকরি জোগারে আবার কারো অন্যসব জিনিসপত্র আনা নেওয়ার। এসব কাজে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রয়েছেন শিক্ষকেরাও। সবাই একেক কাজে ব্যস্ত। পরে রান্না শেষে ২০জন শিক্ষককর্মচারী ও ৪০জন শিক্ষার্থী মিলে একসঙ্গে দুপুরের খাবার খায়।
শ্রেণি শিক্ষক খায়রুল ইসলাম বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণির জীবন ও জীবিকা পাঠ্য বইয়ের স্কিল কুকিং অধ্যায়ের কাজের মধ্যে আনন্দ হাতে কলমে শিখতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা দুপুরে নিজেদের রান্না নিজেরাই করে খাবার খায়। এতে শিক্ষার্থীরা আনন্দ খুঁজে পায়।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের দৃষ্টিভঙ্গি, জ্ঞান, যোগ্যতা, মূল্যবোধ ও সখ্য বাড়াতে জাতীয় শিক্ষাক্রমের মূল ভিত্তিতে এসেছে আমূল পরিবর্তন। এরই ধারাবাহিকতায় ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা জীবন ও জীবিকা বিষয়ের বাস্তব অভিজ্ঞতার অর্জনের অংশ হিসেবে বুধবার শিক্ষার্থীরা নিজেরাই বাজার করা থেকে শুরু করে রান্নার সবকিছুই করেছে। শিক্ষকরা তাদের সহায়তা করেছে ক্লাসের মত।
বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী বিহনা আরফিন বিন্দু, চাঁদনী, তায়েবা, নুফিকাসহ অন্যরা জানায়, আমাদের বাড়িতে মা প্রতিদিনই আমাদের জন্য রান্না করেন। বাবা হাট থেকে চাল, ডাল, সবজি, তেল, নুন থেকে শুরু করে যাবতীয় জিনিস কিনে নিয়ে আসেন। আজ আমরা তাদের কাজটুকু কিভাবে করে সেটার বাস্তব জ্ঞান লাভ করলাম।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ বলেন, শিক্ষার্থীরা নিজের দক্ষতা বাড়াতে এবং বাস্তাব অভিজ্ঞতার জন্য শিক্ষায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে হাতে কলমে বিভিন্ন উপকরণের মাধ্যেমে কৃষি, রান্নাসহ নানা কাজ শিখছে শিক্ষার্থীরা। এতে তারা ভবিষ্যতে আত্মনির্ভরশীল হতে পারবে।
Social Footer