রবিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২২

এখন থেকে আমাদের বিশ্বকাপ শুরু হলো: মেসি

সৌদি আরবের কাছে আচমকা ম্যাচ হেরে রাজ্যের চাপ ভর করেছিল আর্জেন্টিনার ওপর। হবেই না বা কেন, লিওনেল মেসিরা যে কাতারে গিয়েছেন প্রত্যাশার চাপ মাথায় নিয়ে। ৩৬ বছরের অধরা যে শিরোপা, সেটি এবার জয় করতে চান মেসি। 

তার ওপর টানা ৩৬ ম্যাচ ধরে অপরাজিত থেকে দলটি ভক্ত-সমর্থকদের প্রত্যাশা দিগুণ করেছে। এই আর্জেন্টিনাকে নিয়ে তো বাজি ধরাই যায়। ফুটবলবোদ্ধারা সেটা ধরেছেনও। এই আর্জেন্টিনা দল শিরোপা নিয়েই ঘরে ফিরবে—এমন কথা বলা লোকের সংখ্যাও নেহাত কম নয়!সেই দলটি যখন বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই সৌদি আরবের নিকট হোঁচট খেল তখন গেল গেল রব উঠে গেল চারদিকে। 

মেসি কোথায় গেলেন—এমন ব্যঙ্গ বিদ্রুপও চলল দেদার! অমন হারে মেসির মনের অবস্থা বুঝতে মনোবিদ হওয়ার দরকার পড়ে না! হয়তো মনের কোনায় জেদ চেপে রেখেছিলেন লিও। মেক্সিকো ম্যাচে প্রথম গোল করে মেসি যেন আর্জেন্টিনার ওপর থেকে পাহাড় সরালেন।

খেলার ৬৩তম মিনিটে আনহেল ডি মারিয়ার কাছ থেকে পাস পেয়ে মেসি ২০ গজ দূর থেকে গোলরক্ষক ওচোয়াকে ফাঁকি দিয়ে বল জড়ালেন জালে। আর্জেন্টাইন জাদুকর এর চেয়ে সুন্দর গোল আরো করেছেন। কিন্তু এদিন তার উদ্যাপন দেখে মনে হলো বিশ্বকাপই জয় করে ফেলেছেন! হবে না, সৌদির কাছে হেরে যে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠা নিয়েই শঙ্কা জেগেছিল। শঙ্কা এখনো কাটেনি আর্জেন্টিনার। সামনে পোল্যান্ড। 

তবে সৌদি ম্যাচের যে রকম চাপে ছিল মেসিরা অন্তত পোল্যান্ড ম্যাচ খানিকটা ছন্দ নিয়েই খেলতে পারবেন। এছাড়া মেক্সিকোর বিরুদ্ধে ২-০ গোলের জয়ও প্রেরণা হতে পারে।এটা ঠিক যে, মেক্সিকোর সঙ্গে প্রথমার্ধ আর্জেন্টিনা হয়তো প্রত্যাশার চাপেই ভালো খেলতে পারেননি। দ্বিতীয়ার্ধে গোল করে খেলার রং বদলান মেসি। নতুন করে পাওয়া সুযোগ আর হাতছাড়া করতে চান না আর্জেন্টিনা অধিনায়ক। 
তাই তো ম্যাচ শেষে মেসি বলেছেন, এখন থেকে আমাদের বিশ্বকাপ শুরু হলো। কারণ আমরা জানতাম দুটি ম্যাচ জিতেই আমাদের পরের রাউন্ডে যেতে হবে। আমরা গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ অতিক্রম করেছি। তবে প্রথম লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য আমাদের আরেকটি ধাপ অতিক্রম করতে হবে।মেক্সিকো ম্যাচ দিয়ে একগাদা রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন মেসি। এতদিন বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড ছিল কিংবদন্তি দিয়েগো মারাদোনার। মারাদোনা ১৯৮২ থেকে ১৯৯৪ বিশ্বকাপ পর্যন্ত মোট ২১টি ম্যাচ খেলেছিলেন। মেসি ২০০৬ থেকে ২০২২ বিশ্বকাপ মেক্সিকো পর্যন্ত ২১টি ম্যাচ খেলে মারাদোনাকে ছুঁয়ে ফেললেন। 

৩০ নভেম্বর পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাঠে নামলেই এ কিংবদন্তিকে ছাপিয়ে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়বেন মেসি। দুই জনেরই গোলসংখ্যা আটটি করে। মেসির সামনে সুযোগ রয়েছে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার। এজন্য তাকে আর তিনটি গোল করলেই চলবে। তাহলেই যে টপকে যাবেন গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে। ১০ গোল নিয়ে এখনো তিনি বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে আছেন।

একটা জায়গায় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষে আছেন মেসি। মেক্সিকো ম্যাচে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক। এ নিয়ে বিশ্বকাপে সপ্তমবার ম্যাচসেরা হলেন মেসি। ২০০২ বিশ্বকাপ থেকে চালু হওয়া এই পুরস্কার মেসির মতো সাত বার জিতেছেন পুর্তগিজ মহাতারকা রোনালদোও।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.