শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২২

২ কোটি পরিবারকে সহায়তা দিচ্ছি: প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির বর্ণনা তুলে ধরে বলেছেন, সবাইকে একটু সাশ্রয়ী হতে হবে। আমার অনুরোধ, কেউ যেন অপচয় না করি। 

আমাদেরকে অনেক মূল্য দিয়ে গম, ভুট্টা, ভোজ্যতেল, জ্বালানি, চিনি, সবকিছুই অতিরিক্ত দামে আমদানি করতে হচ্ছে। পাশাপাশি পরিবহন খরচও বেড়ে গেছে। আমরা দুই কোটি পরিবারকে সরাসরি খাদ্য সহায়তা দিচ্ছি।

শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) ৫ম জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আমলে আমাদের প্রবৃদ্ধি ৯ ভাগের উপরে অর্জন হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর আমরা ৮ ভাগ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছিলাম। কিন্তু করোনা মহামারী এসে আমাদেরকে বাধাগ্রস্ত করে দেয়। আমেরিকার স্যাংশান, ইউরোপের স্যাংশান, কাউন্টার স্যাংশান, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ প্রভৃতি কারণে প্রত্যেকটা জিনিসের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, যার যেখানে যতটুকু জমি আছে তার এক ইঞ্চি জমিও ফেলে রাখবেন না। যে যা পারেন বেশি বেশি উৎপাদন করুন। নিজেরটা নিজে উৎপাদন করুন। চিকিৎসকদের প্রতিও আহ্বান জানাই, আপনাদেরও জমি জায়গা হয়তো কিছু আছে। সেগুলোতে যাতে ফসল হয়, তরি-তরকারি হয় তার ব্যবস্থা নেন। আমরা নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অনেক দেশকে সাহায্য করতে পারি। আমরা একসাথে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করেছি। সেখানে খাদ্যপ্রক্রিয়াজাত শিল্প করার ব্যাপারে গুরুত্ব দিচ্ছি। জাতির পিতা বলে গেছেন, বাংলাদেশের মানুষকে কেউ দাবায়া রাখতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে জনগণকে ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনা পয়সায় দেওয়া হচ্ছে। আমরা টেলিমেডিসিন সেবা, হেলথ কল সেন্টার 'স্বাস্থ্য বাতায়ন' ২৪ ঘন্টায় চালু রেখেছি। এখানে চিকিৎসকের পরামর্শ, অ্যাম্বুলেন্স বুকিং দেওয়া, অভিযোগ, পরামর্শ ইত্যাদি জানানোর ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরি করে দিয়েছি। মাতৃত্ব এবং শিশুর মৃত্যুহার আজ কমেছে।

 আমাদের এই সাফল্যকে আন্তর্জাতিক বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়েছে। আন্তর্জাতিক চিকিৎসা সাময়িকী 'ল্যানসেট' বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের অর্জন নিয়ে ছয়টি সিরিজ প্রকাশনা তুলে ধরেছে। সেখানে বলা হয়েছে, নানা প্রতিকূলতা সত্বেও বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের অসাধারণ সাফল্য এখন বিশ্বে রোল মডেল।

তিনি বলেন, দেশের হাসপাতালগুলোতে ৬৮ হাজার ৩৪৫টি শয্যাসংখ্যা উন্নীত হয়েছে। বেসরকারী খাতে তা ১ লাখ ৩৬৮টি। ১২ হাজার ৩৮২ জন চিকিৎসক ছিলো, এখন ৩০ হাজার ১৫২ জন চিকিৎসক রয়েছেন সারা দেশে। ৪৩ হাজার ১৫ জন নার্সকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পৃথিবীর কেউ বিনা পয়সে ভ্যাকসিন দেয়নি, কিন্তু বাংলাদেশে আমি দিয়েছি। ভ্যাকসিন যখন গবেষণা পর্যায়ে তখনই বুকিং দেওয়া শুরু করেছিলাম। ভ্যাকসিন গবেষণা সফল না হলে আমাদের টাকাটা হয়তো পানিতে যেতো। করোনাকালীন চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা আমরা করেছি।

স্বাচিপ সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি ডা. ইকবাল আর্সলান। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন স্বাচিপ মহাসচিব ডা. এম এ আজিজ।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.