INFO Breaking
Live
wb_sunny

Breaking News

দেশে জনসংখ্যা ১৬ কোটি, নিবন্ধন ২০ কোটি

দেশে জনসংখ্যা ১৬ কোটি, নিবন্ধন ২০ কোটি

সেবা পেতে ভোগান্তি ছাড়াও জন্মনিবন্ধনের ভুতুড়ে উপাত্ত মিলেছে। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে এখন পর্যন্ত জন্মনিবন্ধন হয়েছে ২০ কোটি ১২ লাখের বেশি মানুষের। 

এই সংখ্যা দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়ে ৩ কোটি ৬০ লাখের বেশি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এক ব্যক্তির নামে একাধিক নিবন্ধন থাকা এবং মৃত ব্যক্তির জন্মনিবন্ধন বাতিল না হওয়ায় এমন অস্বাভাবিক পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। 

সার্ভারের দুর্বলতার কারণে ঠেকানো যাচ্ছে না এক ব্যক্তির একাধিকবার নিবন্ধন। জন্মনিবন্ধনের এমন ভুতুড়ে উপাত্তের কারণে জাতীয় পর্যায়ে পরিকল্পনা গ্রহণে বাধা তৈরি হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

জন্মনিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের মে মাস পর্যন্ত দেশে জন্মনিবন্ধন হয়েছে ২০ কোটি ১২ লাখ ৩৮ হাজার ৭২৪ জনের। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র (বিবিএস) ২০২২ সালের খসড়া জনশুমারি ও গৃহগণনা অনুযায়ী, দেশের বর্তমান জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬। 

সে হিসাবে দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়ে ৩ কোটি ৬০ লাখ জন্মনিবন্ধন বেশি হয়েছে। রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় থেকে প্রকাশিত বার্ষিক পরিসংখ্যান প্রতিবেদনে জন্মনিবন্ধন কার্যক্রমের সমস্যা হিসেবে সংশ্লিষ্ট সফটওয়্যারের সীমাবদ্ধতা, প্রশিক্ষিত জনবলের অভাব এবং মাঠ পর্যায়ে নিজস্ব কাঠামো না থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

জন্মনিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. রাশেদুল হাসান বলছেন, এক ব্যক্তির নামে একাধিক নিবন্ধন থাকা এবং মৃত ব্যক্তির জন্মনিবন্ধন বাতিল না হওয়ায় এমন অস্বাভাবিক পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ২০০১ সাল থেকে জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম হাতে লেখা ফরমে করা হতো। 

সে সময় অনেকে একাধিক জায়গা থেকে জন্মনিবন্ধন করেছেন। কেউ ঢাকার বাইরে থেকে নিয়েছেন, আবার ঢাকা থেকে নিয়েছেন। কেউ নিবন্ধন সনদ হারিয়ে ফেলায় নতুন করে আবার নিয়েছেন। সার্ভারে সমস্যার কারণে একই নিবন্ধন একাধিকবার করার নজিরও আছে। এ ছাড়া বয়স্ক ভাতাসহ কিছু ক্ষেত্রে সুবিধা নেওয়ার জন্যও অনেকে সুবিধামতো জন্মতারিখ ব্যবহার করে বিভিন্ন এলাকায় নিবন্ধন করেছেন।

জন্মনিবন্ধনের এমন ভ্রান্তিকর পরিসংখ্যানের সমাধান প্রসঙ্গে রেজিস্ট্রার জেনারেল বলেন, এ সমস্যার সমাধানে স্ক্রিনিং ডিভাইস তৈরি করা হচ্ছে। নতুন সফটওয়্যার দ্বৈত নিবন্ধন খুঁজে বের করতে পারবে।

জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পর্যাপ্ত দক্ষতার অভাব, জবাবদিহি না থাকা এবং জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে না পারায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক ও সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘

যারা সার্ভিস প্রোভাইডার, তারা যথেষ্ট দক্ষ নয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জন্মনিবন্ধন করতে যে সচেতনতা তৈরি করা দরকার, তা তারা করতে পারছে না। এর আগে সার্ভার থেকে নিবন্ধনের তথ্য হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায়ও তারা অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে।’

মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম আরও বলেন, বাংলাদেশের মতো দেশে জন্মনিবন্ধনের গুণগত উপাত্ত না থাকায় জাতীয় পর্যায়ে সঠিক পরিকল্পনা নেওয়া যাচ্ছে না, বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।