বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২

বাশতৈল পুলিশ ফাঁড়িতে আসামির মৃত্যুর ঘটনায় কনস্টেবল প্রত্যাহার

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়িতে লেবু মিয়া নামে আটক এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় এক কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে গঠন করা হয়েছে একটি তদন্ত কমিটিও।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কনস্টেবল সুব্রত সরকারকে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। অপরদিকে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে তিন কার্যদিবসের মধ্যে।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার  এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় আটক ব্যক্তির (লেবু মিয়া) পাহারার দায়িত্বে থাকা কনস্টেবল সুব্রত সরকারকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।এছাড়া ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মীর মনির হোসেনকে প্রধান এবং সখিপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার এসএম রাকিবুর রাজা ও পরিদর্শক (ক্রাইম) সুব্রত কুমার সাহাকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’

সোমবার রাতে উপজেলার বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়িতে লেবু মিয়া মারা যান। তিনি বাঁশতৈল গ্রামের বাহার উদ্দিনের ছেলে।

ঘটনার পর পুলিশ দাবি করে, লেবু আত্মহত্যা করেছেন। তবে স্বজন ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, তাকে পুলিশ নির্যাতন করে হত্যা করেছে।সখিনা আক্তার নামে এক নারীকে হত্যায় জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য লেবু মিয়া ও সেই নারীর সাবেক স্বামী মফিজুর রহমানকে আটক করে।

পুলিশ জানায়, পাঁচ বছর আগে স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয় সখিনা আক্তারের। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর প্রবাসী ছেলের স্ত্রীকে থাকতেন। পুত্রবধূ বাড়িতে যাওয়ায় গত রোববার রাতে সখিনা বাড়িতে একাই ছিলেন। 

রাতের কোনো এক সময় তার ঘরে ঢুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরদিন বেলা ১২ টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করে বাঁশতৈল ফাড়ি পুলিশ। এই ঘটনায় মফিজুর ও লেবুকে আটক করে রাতে ফাঁড়ির হাজাতখানায় রাখা হয়।বাঁশতৈল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মনিরুজ্জামান বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে পুলিশ ফাঁড়িতে যাই। সেখানে গিয়ে লেবু মিয়ার গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় তাকে দেখতে পাই।’

লেবু মিয়ার স্ত্রী আলেয়া বেগম বলেন, ‘ভালো মানুষকে নিয়ে গেছে পুলিশ। তার সঙ্গে কিছুই ছিল না। কীভাবে রশি তার কাছে গেল? এটা আত্মহত্যা না, হত্যা করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ‘হাজতখানায় রশির বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। কারও দায়িত্বে অবহেলা থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

পুলিশ হেফাজতে লেবুর মৃত্যুর ঘটনা জানাজানির পর পুলিশের নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ এনে মঙ্গলবার সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী।

বিক্ষোভকারী মাসুদ মিয়া বলেন, ‘এটা আত্মহত্যা না, হত্যা করা হয়েছে। তিনি মানসিক রোগী না যে আত্মহত্যা করবেন। তিনি ভালো মানুষ। তাকে বেধরক মারপিটের কারণে মারা গেছে।’

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.