Breaking News

এলেঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে পোষ্টার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে স্বতন্ত্র প্রার্থীর বাড়িতে হামলা

সাইদুর রহমান সমীর, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে পোষ্টার ছেড়াকে কেন্দ্র করে স্বতন্ত্র প্রার্থীর (জগ মার্কা) বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় পাল্টা হামলায় আওয়ামী লীগের এক সমর্থককে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে।আহত আওয়াল পীর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার দিকে পৌর সভার চিনামুড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জানাগেছে,এলেঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে নৌকার পোষ্টার ছেঁড়ার অভিযোগ এনে স্বতন্ত্র প্রাথী মো. শাফী খানের গণসংযোগে বাঁধা দেয় নৌকার সমর্থকরা।বাঁধা পেয়ে নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধ রেখে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাফি খান বাড়ির উদ্যেশে যাওয়ার পথে ফের স্বতন্ত্র প্রার্থীকে হুমকি দেয় তারা। 

পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী তার নিজ বাড়ি গেলে সেখানে নৌকার প্রার্থীসহ সমর্থকরা মিছিল নিয়ে যায়। বাকবিতান্ডার একপর্যায়ে বাড়িতে আক্রমনের চেষ্টা চালায় তারা। স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা তা প্রতিহত করে।পরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা পাল্টা মিছিল বের করেন। মিছিলটি চিনামুড়া মোতালেব খানের চায়ের দোকানে পৌঁছালে নৌকার সমর্থক আওয়াল পীরকে মারপিট করে তারা। এ ঘটনায় চিনামুড়াসহ আশেপাশের এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

চায়ের দোকানদার মোতালেব খান জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থী শাফি খানের একটি মিছিল আমার দোকানের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় আওয়াল পীর দৌড়ে এসে আমার দোকানে আশ্রয় নেয়। পরে আমি দোকানের ঝাঁপ নামিয়ে দিয়ে তাকে রক্ষা করি। মিছিল চলে যাওয়ার পর তার পরিবারের লোকজন এসে তাকে নিয়ে যায়। তাকে কে মারপিট করেছে আমি তা দেখিনি।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মী মিনা আক্তার জানান, শাফি খানের মিছিলটি তার বাসার সামনে লাগানো নৌকার প্রার্থী নুর-এ- আলম সিদ্দিকীর পোষ্টার ও প্লেকার্ড ছিড়ে ফেলা শুরু করলে সে ও তার পরিবার বাঁধা দিতে গেলে মিছিল থেকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। তাদের বাঁধা স্বত্বেও তাদের বাড়ির আশেপাশে লাগানো নৌকার পোষ্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়।

স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক হায়দার আলী জানান, বৃহস্পতিবার রাতে নৌকার প্রার্থী মিছিলসহ চিনামুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এসে সমবেত হলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা তার বাসা থেকে বের হয়ে তাদের বাঁধা দেয়। একপর্যায়ে বাঁধা উপেক্ষা করে স্বতন্ত্র প্রার্থীর বাড়ির আঙিনার বেড়া ভাঙচুর করে। হামলার ছবি স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা মোবাইল ফোনে ধারণ করতে গেলে বেশ কয়েকটি মোবাইল ছিনিয়ে নেয় নৌকার সমর্থকরা।

স্বতন্ত্র প্রার্থীর আরেক সমর্থক হাসমত আলী রেজা জানান, হামলার সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী বাড়িতেই ছিলেন। আমরা তাকে নিরাপত্তার স্বার্থে অনত্র সরিয়ে নেই। আমার ধারনা তার প্রাণনাশের জন্য এ হামলা চালানো হতে পারে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী শাফি খান জানান, হামলার ঘটনার বিষয়টি টাঙ্গাইলের সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। নৌকার সমর্থকদের কারণে সঠিকভাবে নির্বাচনী প্রচরণা করতে পারছিনা। যেখানেই যাচ্ছি সেখানেই তারা বাঁধা প্রদান করছে। এমনকি আমার নিজের এলাকায় চিনামুড়া এসে হুমকি দিয়ে গেছে যে আমার পক্ষে যে নির্বাচন করবে তার হাত-পা ভেঙ্গে ফেলা হবে। ১৬ তারিখের পর এলাকা ছাড়া করা হবে। এলেঙ্গা পৌরসভার নির্বাচনের পরিবেশ অবাধ, সুষ্ঠ ,নিরপেক্ষ ও শান্তিপুর্ন করার জন্য জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দাবি জানাচ্ছি।

হামলার ঘটনা অস্বীকার করে নৌকার প্রার্থী নুর-এ-আলম সিদ্দিকী জানান, নৌকার পোষ্টার কেন ছিড়ছে জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার রাতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর মিছিল থেকে নৌকার সমর্থক চেচুয়ার আওয়াল পীরকে পিটিয়ে গুরতর আহত করে। বর্তমানে সে কালিহাতী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে।

টাঙ্গাইল জেলা সিনিয়ার নির্বাচন কর্মকর্তা এ এইচ এম কামরুল হাসান জানান, বিষয়টি আমাকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।জানার পরপরই কালিহাতী থানাকে অবহতি করেছি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

উল্লেখ্য, আগামি ১৬ মার্চ ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে এলেঙ্গা পৌরসভার নির্বাচনে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে এলেঙ্গা পৌরসভার মোট ভোটার সংখ্যা ৩০ হাজার ৪’শ ৬৭ জন। এ নির্বাচনে মেয়র পদে ৪জন ও কাউন্সিলরসহ সংরক্ষিত মহিলা পদে ১৪জন ও নয়টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৩৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

Type and hit Enter to search

Close