এতে বড় গাছের ক্ষতি না হলেও বনের সদ্য গজিয়ে ওঠা নানা প্রজাতির গাছের চারা, বনফুল, বনলতা, গাছের শিকড়, পিঁপড়া, পোকামাকড়, কীট-পতঙ্গ পুড়ে মরে গেছে। ফলে ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। হুমকির মুখে পরিবেশ।
টাঙ্গাইল বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সখীপুর উপজেলার বহেড়াতৈল ও হতেয়া রেঞ্জের আওতাধীন ১১টি বিট কার্যালয় রয়েছে। বহেড়াতৈল রেঞ্জে ১ হাজার ২০০ একর ও হতেয়া রেঞ্জে ১ হাজার একর জমিতে শালবন রয়েছে।
ফাল্গুন-চৈত্র মাসে শুকনা মৌসুমে গজারি গাছের পাতা ঝরে মাটিতে পড়ে। এ সময় বনের ভেতর ঝরে পড়া শুকনা পাতায় দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দেয়।
বহেড়াতৈল রেঞ্জ কর্মকর্তা এ এইচ এম এরশাদ ও হতেয়া রেঞ্জের কর্মকর্তা আবদুল আহাদ জানান, গত দেড় মাসে ওই দুটি রেঞ্জে প্রায় এক হাজার একর শালবন আগুন লেগে পুড়ে গেছে।
গত মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বহুরিয়া ইউনিয়নের হতেয়া রেঞ্জের কালমেঘা বিটের বেলতলী গ্রামে সরেজমিনে দেখা যায়, আগুনের থাবায় সবুজ বনাঞ্চল হয়ে গেছে কালো। বনের ভেতর গজিয়ে ওঠা নানা প্রজাতির ছোট ছোট গাছপালা, কীট-পতঙ্গ, পিঁপড়াসহ নানা প্রাণী পুড়ে মরে গেছে।
বড় শালগাছগুলো শুধু দাঁড়িয়ে আছে। স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, দুই-চার দিন আগে দুর্বৃত্তরা ওই গ্রামের শালবন আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।
বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরে আলম জানান অনেকে ধূমপান করে বিড়ি-সিগারেটের বাকি অংশ বনে ফেলে। আবার বনের পাশের ফসলের খেতের মালিকেরা বনে আগুন ধরিয়ে দেন। বৃষ্টি হওয়ার পর বন থেকে ঢলের পানির সঙ্গে ছাই জমিতে গড়িয়ে পড়ে। তাঁরা এতে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায় বলে এ ধরনের কাজ করছেন।
জানতে চাইলে হতেয়া রেঞ্জের কালমেঘা বিট কর্মকর্তা মো. আবদুল মোতালেব বলেন, গহিন বনে গভীর রাতে কে বা কারা আগুন লাগাচ্ছে, তাদের ধরা যাচ্ছে না।
টাঙ্গাইল বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামান মুঠোফোনে জানান, বনে আগুন দেওয়া অপরাধ। বন বিভাগের লোকবলের অভাব থাকায় সার্বক্ষণিক পাহারা দেওয়া সম্ভব হয় না। তাঁরা সবাইকে সচেতন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।